Summer Vacation: বছরের শুরুতে যেভাবে তাপমাত্রার পারদ চড়তে শুরু করেছে, তাতে গ্রীষ্মের ভয়াবহতা আঁচ করা যাচ্ছে। মার্চের শুরুতেই রোদের তেজ এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে দুপুরবেলা বাইরে বেরনো দায় হয়ে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই স্কুলপড়ুয়াদের অভিভাবকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। কারণ গরমের ছুটির আগে যদি আবহাওয়া আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠে, তাহলে কীভাবে ছোট ছোট বাচ্চারা ক্লাসে বসে পড়াশোনা করবে? আর তার মধ্যেই সামনে এল মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নতুন ছুটির তালিকা।
গরমের ছুটির দিনক্ষণ প্রকাশ করলো মধ্যশিক্ষা পর্ষদ
পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ (WBBSE) ২০২৫ সালের ছুটির তালিকা প্রকাশ করেছে আগেই। সেই তালিকায় গরমের ছুটির বিষয়টি সামনে আসতেই শুরু হয়েছে চর্চা। অনেকেই ভেবেছিলেন, প্রচণ্ড দাবদাহের কথা মাথায় রেখে ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হবে। কিন্তু বাস্তবে কী ঘটেছে? নতুন তালিকা সামনে আসতেই দেখা গিয়েছে, পর্ষদ গরমের ছুটি বাড়ালেও তা আশানুরূপ হয়নি। বরং একাধিক বিষয়ে দেখা দিয়েছে বিতর্ক, যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবক থেকে শুরু করে শিক্ষানুরাগীরা।
পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ২০২৫ সালে গরমের ছুটি থাকবে মাত্র ১১ দিন (রবিবার বাদে)। ২০২৪ সালে এই ছুটি ছিল ১০ দিন, তার থেকে এবার একদিন বেশি মিলবে। তালিকা অনুযায়ী, ১২ মে থেকে গরমের ছুটি শুরু হবে এবং চলবে ২৩ মে পর্যন্ত। তবে অভিজ্ঞতা বলছে, তাপমাত্রার অতিরিক্ত বৃদ্ধি হলে অতিরিক্ত ছুটি ঘোষণা করা হতে পারে। গত কয়েক বছরে এমনটাই ঘটেছে।
এদিকে, শুধুমাত্র গরমের ছুটি নয়, পর্ষদের ছুটির তালিকা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। তালিকায় এমন বেশ কিছু ছুটির দিন রাখা হয়েছে, যেখানে ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান পালন করতে হবে। অর্থাৎ, সেসব দিনকে কার্যকরী দিন হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষানুরাগীরা।
শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী স্পষ্ট জানিয়েছেন, “পর্ষদের ছুটির তালিকা যে তৈরি করা হয়েছে, তাতে একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে। বিশেষ কয়েকটি ছুটির দিনে ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান পালন করতে হবে, যা আমরা মানতে পারছি না। আমরা দাবি করেছিলাম, এই ছুটির দিনগুলিকে মর্যাদার সঙ্গে ছুটি হিসেবেই ঘোষণা করা হোক। কিন্তু সেই দাবি মানা হয়নি।”
ছুটি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ ছাত্র-ছাত্রীদের
তাই নয়, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, ২০২৫ সালে মোট ৬৫ দিন স্কুল বন্ধ থাকবে। অথচ কয়েক বছর আগেও এই সংখ্যা ছিল ৮৫ দিন। ফলে শিক্ষানুরাগীদের একাংশের দাবি, আগের মতো ৮৫ দিনের ছুটির ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনলে বিদ্যালয়গুলি আঞ্চলিক পরিস্থিতি অনুযায়ী গরমের ছুটি ঠিক করতে পারত। আর তাতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাও বাধাপ্রাপ্ত হত না।
প্রশ্ন উঠছে, এবার কি গরমের ছুটি বাড়ানো হবে? শিক্ষকদের মতে, “আগামী দিনে তাপপ্রবাহ বাড়লে পর্ষদ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে পারে। তবে এখনই নিশ্চিত কিছু বলা সম্ভব নয়।” যদিও অভিভাবকদের একাংশের দাবি, পর্ষদের উচিত আগে থেকেই ছুটির দিন বাড়ানো। কারণ চরম গরমে শিশুদের ক্লাসে বসে থাকা যে কষ্টকর, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন দেখার, প্রশাসন এই বিষয়ে ভবিষ্যতে কী সিদ্ধান্ত নেয়।