Weather Update: ফাল্গুনের মাঝামাঝি সময়ে যখন বসন্তের আমেজে মেতে ওঠার কথা, তখনই বঙ্গে দুর্যোগের আশঙ্কা। গত কয়েকদিন ধরেই আবহাওয়া বদলের ইঙ্গিত মিলেছিল। শুক্রবার ভোরে কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিল চারদিক। তবে বেলা বাড়তেই আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে যায়। শীতের শেষে এমন আবহাওয়ার পরিবর্তন অনেকের কাছেই বিস্ময়কর ঠেকছে। ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে হালকা ঠান্ডার অনুভূতি যেন মনে করিয়ে দিচ্ছে শীতের শেষ ছোঁয়া। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আপাতত এই পরিস্থিতি রবিবার পর্যন্ত বজায় থাকবে। এরপর সোমবার থেকে কিছুটা পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
কমলা ও হলুদ সতর্কতা, দক্ষিণবঙ্গে তুমুল ঝড়-বৃষ্টি (Weather Update)
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দক্ষিণবঙ্গে বড়সড় ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কলকাতা, পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে শুক্রবার থেকে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হতে পারে। ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ ৩০-৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। শনি ও রবিবার এই গতি আরও বাড়তে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়ের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি ও নদিয়ায় কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। বিশেষ করে ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরে এই দুর্যোগের তীব্রতা বেশি থাকবে।
উত্তরবঙ্গেও দুর্যোগ, দার্জিলিঙে তুষারপাতের সম্ভাবনা(Weather)
দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলাতেও খারাপ আবহাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় হালকা বৃষ্টি ও তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির জন্য হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এলাকায় আগামী ৪৮ ঘণ্টায় তুষারপাতের সম্ভাবনা থাকায় পর্যটকদের সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
ঝড়-বৃষ্টির প্রভাবে ক্ষতির আশঙ্কা, কৃষকদের সতর্কবার্তা
টানা ঝড়-বৃষ্টির কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হতে পারে চাষাবাদে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বৃষ্টির কারণে সরষে ও আলু চাষ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এছাড়াও, শিলাবৃষ্টি হলে আম, লিচু ও অন্যান্য গ্রীষ্মকালীন ফলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া, নদী উপকূলবর্তী অঞ্চলে মৎস্যজীবীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সমুদ্রে প্রবল ঢেউ ওঠার সম্ভাবনা থাকায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে নিষেধ করা হয়েছে।
সোমবার থেকে পরিবর্তনের সম্ভাবনা, কিন্তু আরও বৃষ্টি আসছে?
আবহাওয়াবিদদের মতে, রবিবার পর্যন্ত দুর্যোগের পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে। তবে সোমবার থেকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে। তবে এর মানে এই নয় যে, আবহাওয়া পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। রাজস্থান ও অসমে তৈরি হওয়া দুটি ঘূর্ণাবর্তের প্রভাব সরাসরি বাংলার আবহাওয়ার ওপর পড়ছে। বঙ্গোপসাগরেও একটি বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। এছাড়াও, পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাবের কারণেই দক্ষিণবঙ্গে এই দুর্যোগের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যদিও সোমবার থেকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার ইঙ্গিত রয়েছে, তবু আগামী সপ্তাহেও বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না আবহাওয়াবিদরা।