Railways New Rules: ভারতীয় রেল প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ যাত্রীকে বহন করে, বিশেষ করে দূরপাল্লার ট্রেনগুলিতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে টিকিট সংরক্ষণ করা আবশ্যক। অনেক সময়, যাত্রার পরিকল্পনায় পরিবর্তন আসতে পারে, যার ফলে টিকিট বাতিল করতে হয়। সাধারণত, টিকিট বাতিলের সময় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বাতিলকরণ ফি হিসেবে কেটে নেওয়া হয়। তবে রেলের নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম অনুসরণ করলে সম্পূর্ণ টাকা ফেরত পাওয়া সম্ভব! চলুন দেখে নেওয়া যাক রেলের নতুন রিফান্ড নিয়ম ও শর্তাবলী।
টিকিট বাতিলের ক্ষেত্রে ক্যানসেলেশন চার্জ কত?
যদি আপনি কোনো কনফার্ম ট্রেন টিকিট বাতিল করেন, তাহলে রেলের নির্ধারিত সময় ও নীতির ভিত্তিতে টাকা ফেরত দেওয়া হয়। সাধারণত, ট্রেন ছাড়ার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টিকিট বাতিল করলে একটি নির্দিষ্ট শতাংশ কেটে নেওয়া হয়। নিচে সময় অনুযায়ী টিকিট বাতিলের চার্জ ব্যাখ্যা করা হলো—
১. ৪৮-১২ ঘণ্টা আগে বাতিল করলে – টিকিটের মোট ভাড়ার ২৫% কেটে নেওয়া হয় (সাথে প্রযোজ্য জিএসটি)।
২. ১২-৪ ঘণ্টা আগে বাতিল করলে – মোট ভাড়ার ৫০% চার্জ কেটে নেওয়া হয় (সাথে প্রযোজ্য জিএসটি)।
৩. ৪ ঘণ্টার কম সময় আগে বাতিল করলে – কোনো রিফান্ড পাওয়া যাবে না, তবে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে টিডিআর (Ticket Deposit Receipt) জমা দিলে রিফান্ড পাওয়ার সুযোগ থাকে।
কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণির টিকিট বাতিলের ক্ষেত্রে কী পরিমাণ টাকা কাটা হয়?
নিচে বিভিন্ন ক্লাস অনুযায়ী টিকিট বাতিলের চার্জ উল্লেখ করা হলো—
এসি ফার্স্ট ক্লাস / এক্সিকিউটিভ ক্লাস – ২৪০ টাকা + জিএসটি
এসি টু টিয়ার / ফার্স্ট ক্লাস – ২০০ টাকা + জিএসটি
এসি থ্রি টিয়ার / এসি চেয়ার কার / এসি থ্রি ইকোনমি – ১৮০ টাকা + জিএসটি
স্লিপার ক্লাস – ১২০ টাকা
দ্বিতীয় শ্রেণি (জেনারেল) – ৬০ টাকা
কখন সম্পূর্ণ টাকা ফেরত পাবেন?
রেলের নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম অনুসরণ করলে কোনো চার্জ কাটা ছাড়াই পুরো টাকার রিফান্ড পাওয়া সম্ভব। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত উল্লেখ করা হলো—
১. ওয়েটিং লিস্ট টিকিট কনফার্ম না হলে – ট্রেন ছাড়ার আগে চার্ট তৈরি হয়ে গেলে এবং টিকিট কনফার্ম না হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টিকিট বাতিল হয়ে যায়। এই ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ২০ টাকা ক্যানসেলেশন ফি কেটে বাকি পুরো টাকা ফেরত দেওয়া হয়।
২. চার্ট তৈরি হওয়ার পরও টিকিট ওয়েটিং লিস্টে থাকলে – যদি ট্রেন ছাড়ার আগে টিকিট কনফার্ম না হয়, তবে রেলের সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে টিকিট বাতিল করে এবং সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত দেয়।
৩. যদি ট্রেন বাতিল হয় – কোনো কারণে যদি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ট্রেন বাতিল করে, তাহলে যাত্রীদের কোনো চার্জ ছাড়াই ১০০% রিফান্ড দেওয়া হয়।
৪. যদি ট্রেন পাঁচ ঘণ্টার বেশি দেরিতে চলে – যাত্রী চাইলে যাত্রা শুরুর আগেই টিকিট বাতিল করে পুরো টাকার রিফান্ড নিতে পারেন।
৫. বিকল্প ট্রেন প্রস্তাবিত হলে, কিন্তু যাত্রী ভ্রমণ করতে না চান – যদি ভারতীয় রেল কোনো কারণে নির্ধারিত ট্রেন বাতিল করে এবং যাত্রীদের জন্য বিকল্প ট্রেনের ব্যবস্থা করে, কিন্তু যাত্রী তা গ্রহণ না করতে চান, তাহলে তিনি পুরো টাকার ফেরত দাবি করতে পারেন।
কোন ক্ষেত্রে রিফান্ড পাওয়া যাবে না?
সবসময় রিফান্ড পাওয়া যায় না, কিছু বিশেষ শর্ত রয়েছে যেখানে কোনো টাকা ফেরত দেওয়া হয় না। যেমন—
কনফার্ম তৎকাল টিকিট – যদি আপনি কোনো তৎকাল টিকিট বুকিং করে থাকেন এবং তা বাতিল করেন, তাহলে কোনো রিফান্ড দেওয়া হবে না।
চার্ট তৈরি হওয়ার পর কনফার্ম টিকিট বাতিল করলে – চার্ট তৈরি হওয়ার পর কনফার্ম টিকিট বাতিল করলে কোনো টাকা ফেরত পাওয়া যায় না।
স্টেশনে না গিয়ে ট্রেন মিস করলে – যদি যাত্রী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্টেশনে না পৌঁছান এবং ট্রেন ছেড়ে যায়, তাহলে টিকিটের জন্য কোনো রিফান্ড পাবেন না।
রিফান্ডের জন্য কীভাবে আবেদন করবেন?
১. অনলাইনে বুক করা টিকিট – যদি আপনি IRCTC-এর মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কেটেছেন, তাহলে টিকিট বাতিল করার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বা ওয়ালেটে টাকা ফেরত চলে যাবে।
২. কাউন্টার থেকে কেনা টিকিট – স্টেশন কাউন্টার থেকে কাটা টিকিটের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টিকিট জমা দিয়ে রিফান্ডের আবেদন করতে হবে।
৩. টিডিআর ফাইল করা – যদি আপনার বিশেষ কোনো সমস্যা হয়, যেমন ট্রেন দেরি হওয়া, ট্রেন বাতিল হওয়া বা অন্য কোনো কারণ, তাহলে টিডিআর (Ticket Deposit Receipt) জমা দিয়ে রিফান্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন।
ট্রেনে ভ্রমণ করার আগে রেলের টিকিট বাতিল ও রিফান্ড নীতিগুলি সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি সঠিক নিয়ম মেনে টিকিট বাতিল করেন, তাহলে হয়তো আপনার সম্পূর্ণ টাকা ফেরত পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাই টিকিট বুকিংয়ের সময় রিফান্ড নীতি সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন, যাতে ভবিষ্যতে কোনো সমস্যায় না পড়তে হয়।
আরও পড়ুন। Ration Card: শুরু হয়েছে রেশন কার্ড নিষ্ক্রিয়করণ, জেনে নিন নতুন নিয়ম ও প্রক্রিয়া!