Ekchokho.com 🇮🇳

Pahalgam: পাক সেনার প্রিয়পাত্র সইফুল্লা কসৌরি! পাহেলগাঁও হামলার মাস্টারমাইন্ড সইফুল্লা কসৌরি কে?

নিশব্দ মৃত্যু ছায়া ফেলেছে কাশ্মীরের পহেলগাঁও (Pahalgam)। এক ভয়াবহ জঙ্গি হামলা যেন ফের স্মরণ করিয়ে দিল ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলা। গতকাল, পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের লক্ষ্য করে চালানো সেই নৃশংস জঙ্গি হামলায় এখন পর্যন্ত ২৬ জন নিহত, যার মধ্যে রয়েছেন এক স্থানীয় বাসিন্দা ও দুই বিদেশি নাগরিক। হামলার পর গোটা দেশ জুড়ে ...

Published on:

Pahalgam

নিশব্দ মৃত্যু ছায়া ফেলেছে কাশ্মীরের পহেলগাঁও (Pahalgam)। এক ভয়াবহ জঙ্গি হামলা যেন ফের স্মরণ করিয়ে দিল ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলা। গতকাল, পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের লক্ষ্য করে চালানো সেই নৃশংস জঙ্গি হামলায় এখন পর্যন্ত ২৬ জন নিহত, যার মধ্যে রয়েছেন এক স্থানীয় বাসিন্দা ও দুই বিদেশি নাগরিক। হামলার পর গোটা দেশ জুড়ে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়, এবং সেইসঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

পহেলগাঁও (Pahalgam) জঙ্গি হামলা: কী ঘটেছিল?

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও এলাকায় পর্যটকদের একটি গাড়িকে টার্গেট করে বেপরোয়া গুলি চালায় জঙ্গিরা। মুহূর্তের মধ্যে মৃত্যু ঘটে ২৬ জন নিরীহ মানুষের। এই ঘটনায় আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। কাশ্মীর পর্যটন মরসুমের মধ্যেই এই হামলা দেশের নিরাপত্তাকে বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

TRF-এর দায় স্বীকার: নতুন করে আতঙ্ক

এই মর্মান্তিক হামলার দায় স্বীকার করেছে লস্কর-ই-তৈবা (Lashkar-e-Taiba)-র সহযোগী সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF)। ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করার পর থেকেই TRF-এর উত্থান শুরু হয়। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, TRF মূলত লস্কর-এরই একটি শাখা, যারা জম্মু-কাশ্মীর অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ ছড়ানোর কাজ করে। তাদের লক্ষ্য ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী এবং নিরীহ সাধারণ মানুষকে টার্গেট করা।

কেন্দ্র সরকারের পদক্ষেপ: TRF নিষিদ্ধ

২০২৩ সালে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক TRF-কে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে এবং নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। TRF-এর বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা, অনুপ্রবেশ, অস্ত্র পাচার ও মাদক পাচার-এর অভিযোগ রয়েছে। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের হত্যা থেকে শুরু করে বহু অপরাধমূলক কার্যকলাপের সাথে জড়িত এই সংগঠন। তবে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও TRF এখনও সক্রিয় এবং এই হামলার পর তা ফের প্রমাণিত হল।

হামলার মাস্টারমাইন্ড সইফুল্লা খালিদ কসৌরি কে?

গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এই হামলার পিছনে মূল ষড়যন্ত্রকারী সইফুল্লা খালিদ কসৌরি (Saifullah Khalid Kasuri), যাকে লস্করের ডেপুটি চিফ বলা হয়। কসৌরি একজন কুখ্যাত আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী, যার পাকিস্তানের সেনা ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে গভীর যোগাযোগ রয়েছে। পাক সেনার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা তাকে প্রায়শই ভিআইপি আতিথেয়তা প্রদান করে থাকেন।

সইফুল্লার বিলাসবহুল জীবন ও জঙ্গি কার্যকলাপ

কসৌরির জীবনযাপন অত্যন্ত বিলাসবহুল। তাকে পাকিস্তানের VVIP জঙ্গি বলা হয়। সে শুধু লস্কর-ই-তৈবার নয়, আন্তর্জাতিক জঙ্গি নেতা হাফিজ সইদ-এর খুব ঘনিষ্ঠ বলেও তথ্য এসেছে। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা RAW একাধিকবার প্রমাণ পেয়েছে যে TRF-এর সমস্ত কার্যকলাপের কেন্দ্রে রয়েছেন এই কসৌরি। তিনি শুধু জঙ্গি প্রশিক্ষণই নয়, পাকিস্তান থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে অস্ত্র এবং ড্রাগ পাচারের চক্রও পরিচালনা করেন।

দেশের প্রতিক্রিয়া: প্রতিবাদ ও সমবেদনা

পহেলগাঁও হামলার পর কাশ্মীর সহ গোটা দেশ উত্তাল। বারামুল্লা, শ্রীনগর, পুঞ্চ, কুপওয়ারা ও জম্মু জুড়ে হাজার হাজার মানুষ মোমবাতি মিছিল করেছেন। সাধারণ মানুষ, ছাত্র, যুবক, ধর্মীয় সংগঠন এবং রাজনৈতিক দলগুলি এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে।

জম্মুতে বজরং দলের বিক্ষোভ

জম্মুতে বজরং দলের কর্মীরা রাস্তায় নেমে জঙ্গি হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁরা দাবি করেছেন অবিলম্বে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হোক এবং TRF-এর মূল কেন্দ্র ধ্বংস করা হোক।

আখুর গ্রামে শোকপ্রকাশ

পহেলগাঁও হামলার প্রতিবাদে আখুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা মোমবাতি মিছিল করে শোকপ্রকাশ করেন এবং নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রতিক্রিয়া ও পরবর্তী পদক্ষেপ

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি সৌদি সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরেছেন এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল-এর সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, “নিহতদের রক্ত বৃথা যাবে না, দোষীদের কঠিনতম শাস্তি পেতে হবে।” আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও নিহতদের পরিবারকে সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, এই হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরের সীমানা এলাকাগুলিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীর নজরদারি। ড্রোন নজরদারি, এলিট কমান্ডো টিম, প্রযুক্তিনির্ভর গোয়েন্দা নজরদারি চালানো হচ্ছে।

কাশ্মীরের পহেলগাঁও হামলা ভারতীয় জাতিকে আরও একবার সতর্ক করল – সন্ত্রাসবাদ এখনও দমে যায়নি। তবে দেশের সাধারণ মানুষ, নিরাপত্তা বাহিনী এবং নেতৃত্ব একসঙ্গে থাকলে এই ষড়যন্ত্র দমন করা সম্ভব। এখন দেখার বিষয়, সরকার কত দ্রুত এবং কীভাবে TRF-এর বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযান চালায়। নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের Tollywood Online কে।

অবশ্যই দেখবেন: Indian Army: ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব! পহেলগাঁও হামলার পর কাশ্মীরে ২ জঙ্গিকে গুলি করে মারল ভারতীয় সেনা