Gujrat: লোকসভা ভোটে জেতার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মাছ-মাংসকে হাতিয়ার করে তুলেছিলেন। বলা ভালো নিরামিষ এবং আমিষ এই দুটোকে প্রধান অস্ত্র করে তুলেছিলেন। আমিষ খাবার গ্রহণ করলে শাস্তি হতে পারে এমন ফতোয়া কেউ তোলেনি। তবে এবারে ভোট নির্বাচন শেষে গোটা একটা শহর থেকে বাদ হতে চলেছে আমিষ খাদ্যদ্রব্য।
ভোটের ময়দানে মাছ মাংসের কথা তুলে বিরোধীদের নিশানা করাটা একরকম অভ্যাস করে ফেলেছিলেন মোদি। যেন দেশে যা কিছু খারাপ যা কিছু অন্যায় হচ্ছে সবকিছুর দোষ আমিষের। কখনও রাহুল-লালুর শ্রাবণ মাসে মাংস রান্নার ছবি, কখনও আবার তেজস্বীর নবরাত্রির সময় মাছ খাওয়া, একযোগে সবকিছুকেই তুলোধোনা করেছেন তিনি। একে ‘মুঘল মানসিকতা’ বলে ব্যঙ্গ করতেও ছাড়েননি।
প্রথমে সকলেই ভেবেছিলেন এই অস্ত্র হয়তো কাজে লাগবে না। তবে ভোট নির্বাচনের শেষে সকলকে অবাক করে দিয়ে গোটা একটা শহর এবারে সেই কথা সত্যি করতে চলেছে। সম্প্রতি গুজরাটের পালিতানা নামে এক শহরে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে আমিষ। রাতারাতি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে শহরের সমস্ত মাছ-মাংসের দোকান।
এমনকি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে শহরের কোথাও আমিষ খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করা চলবে না। পশুহত্যা বা মৃত পশু সামনে ঝুলিয়ে রাখা আইনত অপরাধ হিসেবেই গণ্য হবে। এমনকি কেউ লুকিয়ে এই কাজ করলে যদি কোন ভাবে ধরা পড়ে তাহলে মিলবে কঠোরতম শাস্তি।
জানা গিয়েছে, গুজরাটের এই শহরে মূলত জৈনদের বাস। সবসময় অহিংসার প্রচার করে আসা এই সম্প্রদায়ের মানুষজন আমিষদ্রব্য ছুঁয়েও দেখেন না। যার কারণে কিছু কিছু জায়গায় আমিষ খাদ্যদ্রব্যর দোকান দেখে অস্বস্তিতে পড়ছেন তারা। তাই তারাই মূলত এই উদ্যোগ তুলেছেন।
প্রতিবাদে নামেন পালিতানা শহরের জৈনরা। প্রায় ২০০জন জৈন সন্ন্যাসী এই নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। আর তাতেই বাধ্য হয়ে এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয় প্রশাসন। তাদের এই প্রতিবাদের পরেই শহরের ২৫০টিরও বেশি মাংসের দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আর এর পাশাপাশি নজর রাখা হচ্ছে যাতে শহরের কোথাও কোন আমিষ খাবার বিক্রি করা না হয়। এর আগে অযোধ্যায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠাকে সামনে রেখে আমিষ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। মন্দির চত্বর সহ বেশ কিছু জায়গায় এখনও নিষিদ্ধ আমিষ। এবারে সেই পথেই হাঁটলো গুজরাটের এই শহর। গোটা বিশ্বে এমন নজির প্রথমবার।