Kolkata Airport: নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (Kolkata Airport) যাত্রী ও বিমান চলাচলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নতুন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (ATC) টাওয়ারের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা বিমানবন্দরের কার্যকারিতা আরও উন্নত করবে।
নতুন এটিসি টাওয়ারের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু
সোমবার বিকেল থেকে নতুন এটিসি টাওয়ারের পরীক্ষামূলক পরিচালনা শুরু হয়। নতুন টাওয়ারের নিয়ন্ত্রকরা প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে আগত এবং বহির্গামী বিমানগুলিকে পরিচালনা করেন। পরবর্তী তিন মাস ধরে প্রতি সপ্তাহে সোমবার থেকে শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত নতুন এবং পুরাতন এটিসি টাওয়ার সমান্তরালে কাজ করবে।
একজন বিমানবন্দর কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই পরীক্ষামূলক পর্যায়ে নতুন টাওয়ার থেকে সরাসরি বিমান চলাচলের দায়িত্ব নেওয়া হবে, যার মধ্যে উড্ডয়ন, অবতরণ এবং ফ্লাইট পরিচালনার বিভিন্ন দিক অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
পুরাতন ও নতুন এটিসি টাওয়ারের পার্থক্য
নতুন এটিসি টাওয়ারটি উচ্চতায় পুরাতন টাওয়ারের তুলনায় প্রায় ৭৫ ফুট বেশি। পুরাতন টাওয়ারটি যেখানে ১১২ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন, নতুন টাওয়ারটি তার থেকে অনেক উঁচু। যদিও নতুন টাওয়ারটি প্রযুক্তিগতভাবে আরও উন্নত, তবে এটি এখনও ২০১২ সালের পুরনো সিস্টেম ব্যবহার করছে।
নতুন একটি অত্যাধুনিক সিস্টেম চালু করতে হলে সেটি নির্বাচন, ক্রয়, ইনস্টলেশন এবং কমিশনিংয়ের জন্য ১৮ থেকে ২৪ মাস সময় লাগতে পারে। তাই, এত দীর্ঘ সময় অপেক্ষা না করে, এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (AAI) সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে নতুন টাওয়ারে পুরাতন সিস্টেমের একটি উন্নত সংস্করণ ব্যবহার করা হবে।
এই তিন মাসের পরীক্ষামূলক পর্যায়ে যদি সবকিছু সুষ্ঠুভাবে চলে, তবে পুরাতন এটিসি টাওয়ারটি বন্ধ করে নতুন এটিসি টাওয়ারকেই স্থায়ীভাবে কার্যকর করা হবে।
নতুন এটিসি টাওয়ার চালুর ফলে কী সুবিধা হবে?
নতুন এটিসি টাওয়ার চালুর ফলে বিমান চলাচলের নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতা আরও উন্নত হবে। এটি শুধুমাত্র বিমান সংস্থাগুলোর জন্য নয়, যাত্রীদের জন্যও অনেক সুবিধা বয়ে আনবে। নিচে এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো:
১. বিমান চলাচলের উন্নত নিয়ন্ত্রণ: নতুন এটিসি টাওয়ার আরও আধুনিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিমানবন্দর ও আকাশপথে বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে। এটি বিমানগুলোর নিরাপদ উড্ডয়ন ও অবতরণ নিশ্চিত করবে।
২. ফ্লাইট বিলম্ব হ্রাস: উন্নত প্রযুক্তির কারণে উড্ডয়ন ও অবতরণ আরও সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হবে, ফলে ফ্লাইটের বিলম্ব কমবে। যাত্রীরা সময়মতো তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।
৩. পাইলট ও গ্রাউন্ড স্টাফের সঙ্গে উন্নত সমন্বয়: এটিসি টাওয়ার পাইলটদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে, যার ফলে ফ্লাইট সংক্রান্ত যে কোনও পরিবর্তন দ্রুত জানানো সম্ভব হবে।
৪. আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ ও নিরাপত্তা: নতুন টাওয়ার আরও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ করতে পারবে। প্রতিকূল আবহাওয়া বা জরুরি পরিস্থিতিতে এটি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে যাত্রীদের নিরাপদ রাখতে সহায়তা করবে।
৫. জরুরি ব্যবস্থাপনা: জরুরি মুহূর্তে নতুন এটিসি টাওয়ার বিমানবন্দর কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারবে, যা যাত্রী ও ফ্লাইট ক্রুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
কলকাতা বিমানবন্দরের (Kolkata Airport) নতুন এটিসি টাওয়ার চালু হওয়ার ফলে বিমান চলাচল আরও নিরাপদ ও দক্ষ হবে। এটি শুধু যাত্রীদের সুবিধা দেবে না, বরং পুরো বিমানবন্দরের কার্যকারিতা বাড়িয়ে তুলবে। পুরাতন টাওয়ারের তুলনায় নতুন টাওয়ার উচ্চতা ও প্রযুক্তির দিক থেকে অনেক উন্নত, যা কলকাতা বিমানবন্দরকে আরও আধুনিক পর্যায়ে নিয়ে যাবে। যদি পরীক্ষামূলক পর্যায় সফল হয়, তবে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এটি পুরোপুরি কার্যকর হবে এবং পুরাতন এটিসি টাওয়ার আনুষ্ঠানিকভাবে ইতিহাসের অংশ হয়ে যাবে।