লেটেস্ট খবর বিনোদন অফবিট রাশিফল পশ্চিমবঙ্গ ভারত খেলা চাকরি টাকা পয়সা টেক আবহাওয়া পলিসি

High Speed Train: ভারতে আসছে সুপারফাস্ট ট্রেন! ২৮০ কিমি প্রতি ঘণ্টার গতিতে ছুটবে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ হাইস্পিড ট্রেন—কবে থেকে চলবে?

Published on:

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

 

High Speed Train: রেলযাত্রায় অভ্যস্ত ভারতবাসীর জন্য আসছে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। সাধারণত ভারতীয় রেলের গড় গতি তুলনামূলক কম হলেও এবার সেই ধারণা বদলে দিতে চলেছে ভারতীয় রেলওয়ে। দেশে প্রথমবার চালু হতে চলেছে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ (Make in India) প্রকল্পের আওতায় তৈরি উচ্চগতির ট্রেন (High Speed Train)। বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের (Vande Bharat Express) সাফল্যের পর এবার আরও উন্নত প্রযুক্তি নিয়ে আসা হচ্ছে এই সুপারফাস্ট ট্রেন, যা ঘণ্টায় ২৮০ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারবে। রেলমন্ত্রীর (Rail Minister) সাম্প্রতিক ঘোষণায় স্পষ্ট, ভারতীয় রেল যুগান্তকারী প্রযুক্তি এবং আধুনিক নকশার ওপর জোর দিচ্ছে, যা যাত্রীদের জন্য আরও দ্রুত ও আরামদায়ক ভ্রমণের সুযোগ করে দেবে।

এই উদ্যোগ ভারতীয় রেলের পরিকাঠামোকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। বর্তমানে দেশে উচ্চগতির ট্রেন (High Speed Train) বলতে শুধুমাত্র বন্দে ভারতকেই বোঝানো হয়, কিন্তু এবার তৈরি হচ্ছে এমন এক ট্রেন, যা যাত্রীদের সময় বাঁচাবে, আরাম দেবে এবং আন্তর্জাতিক মানের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা প্রদান করবে। প্রশ্ন হল, কবে থেকে চলবে এই ট্রেন? কী থাকবে এতে বিশেষ সুবিধা?

২৮ কোটি টাকায় তৈরি হচ্ছে হাইস্পিড ট্রেন, কী বিশেষত্ব রয়েছে?

ভারতীয় রেলের নতুন এই উচ্চগতির ট্রেনের ডিজাইন এবং নির্মাণের কাজ করছে ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি, চেন্নাই (Integral Coach Factory, Chennai) ও বিএমএল (BEML)। জানা গিয়েছে, প্রতিটি ট্রেন তৈরিতে ব্যয় হবে প্রায় ২৮ কোটি টাকা (কর বাদে)। এই ট্রেনের কাঠামো হবে সম্পূর্ণ এরোডাইনামিক (Aerodynamic), যা বেশি গতির জন্য আদর্শ।

এছাড়াও থাকছে আরও কিছু অত্যাধুনিক বৈশিষ্ট্য—

  • স্বয়ংক্রিয় দরজা (Automatic Doors)
  • সিল করা গ্যাংওয়ে (Sealed Gangways)
  • উন্নত HVAC সিস্টেম (Modern HVAC System)
  • সিসিটিভি ক্যামেরা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা (CCTV Surveillance & Safety Measures)
  • অগ্নিনির্বাপক প্রযুক্তি (Advanced Fire Safety System)
  • এয়ারটাইট বডি (Airtight Body) যা উচ্চ গতিতে চলার জন্য সহায়ক
  • আরও আরামদায়ক আসন (Ergonomic Seating for Comfort)

এই ট্রেনের এক্সিলারেশন সিস্টেম অত্যন্ত উন্নত হবে, যার ফলে স্বল্প সময়ে এটি সর্বোচ্চ গতিতে পৌঁছে যাবে। রেলমন্ত্রীর মতে, এই প্রকল্পটি ‘আত্মনির্ভর ভারত’ (Atmanirbhar Bharat) উদ্যোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

মুম্বাই-আহমেদাবাদ হাইস্পিড করিডোর: সমুদ্রের নিচে টানেল!

শুধু উচ্চগতির ট্রেন চালুই নয়, একইসঙ্গে রেলমন্ত্রক দ্রুতগতির রেল করিডোর নির্মাণেও জোর দিচ্ছে। মুম্বাই-আহমেদাবাদ হাইস্পিড রেল প্রকল্পের (Mumbai-Ahmedabad High-Speed Rail Project) কাজ জোরকদমে চলছে। এই প্রকল্পে নির্মিত হতে চলেছে সমুদ্রের নিচে টানেল (Undersea Tunnel), যা ভারতে প্রথমবার হতে চলেছে।

প্রকল্পের আপডেট অনুযায়ী—

  • ৫০৮ কিলোমিটার দীর্ঘ হাইস্পিড করিডোর (508 km Long Corridor)
  • ১২টি স্টেশন (Mumbai, Thane, Virar, Boisar, Vapi, Bilimora, Surat, Bharuch, Vadodara, Anand, Ahmedabad, Sabarmati)
  • ৫৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সেকশনের কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন
  • ১৩৮৯.৫ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ শেষ

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হাইস্পিড করিডোর সম্পূর্ণ হলে মুম্বাই থেকে আহমেদাবাদ পৌঁছতে মাত্র ২ ঘণ্টা ৭ মিনিট সময় লাগবে! বর্তমানে এই দূরত্ব ট্রেনে অতিক্রম করতে ৬ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে।

কবে থেকে চলবে এই সুপারফাস্ট ট্রেন?

রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের মধ্যে প্রথম হাইস্পিড ট্রেন (High Speed Train) চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথম ধাপে ২৮০ কিমি প্রতি ঘণ্টার ট্রেনগুলির ট্রায়াল শুরু হবে, এরপর তা বিভিন্ন রুটে চালানো হবে।

এখন প্রশ্ন, দেশের কোন রুটে এই ট্রেনগুলি চলবে? সূত্র অনুযায়ী, শুরুতে দিল্লি-মুম্বাই (Delhi-Mumbai), দিল্লি-কলকাতা (Delhi-Kolkata) এবং চেন্নাই-হায়দরাবাদ (Chennai-Hyderabad) রুটে চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ধাপে ধাপে অন্যান্য শহরেও এই হাইস্পিড ট্রেন (High Speed Train) পরিষেবা সম্প্রসারিত করা হবে।

উন্নত প্রযুক্তির ট্রেনে নতুন অভিজ্ঞতা!

ভারতীয় রেলওয়ে (Indian Railways) যাত্রীসেবায় যে নয়া মাত্রা যোগ করতে চলেছে, তা নিঃসন্দেহে রেলভ্রমণের অভিজ্ঞতাকে বদলে দেবে। সুপারফাস্ট ট্রেনের ফলে দূরত্ব কমবে, সময় বাঁচবে এবং উন্নতমানের পরিষেবা পাওয়া যাবে। বিশেষ করে যাঁরা অফিস বা ব্যবসার কাজে দূরপাল্লার যাত্রা করেন, তাঁদের জন্য এটি হবে এক বড় সুবিধা।

সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের আওতায় তৈরি এই ট্রেনগুলি শুধুমাত্র দেশের রেল ব্যবস্থা উন্নত করবে না, বরং আন্তর্জাতিক বাজারেও ভারতের প্রযুক্তিগত দক্ষতাকে তুলে ধরবে। সাধারণ মানুষের জন্য এটি এক নতুন অভিজ্ঞতা হতে চলেছে—আর সেই অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে খুব শীঘ্রই!

আরও পড়ুন। UPI Payments: বন্ধ হতে পারে UPI পেমেন্ট! নতুন নিয়ম জারি ১লা এপ্রিল থেকে; জানুন বিস্তারিত 

About Author