Unified Pension Scheme: সরকারি চাকরি মানেই অনেকের কাছে একদিকে নিশ্চিন্ত ভবিষ্যৎ, অন্যদিকে অবসর পরবর্তী জীবনের সুরক্ষা। তবে সময়ের সঙ্গে বদলেছে পেনশন সংক্রান্ত অনেক নিয়ম। একসময় সরকারি কর্মচারীরা নিশ্চিত পেনশন (Guaranteed Pension) পেতেন, কিন্তু নতুন নিয়মে সেটি বদলে গেছে। এখন, কেন্দ্র সরকার আবারও বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে, যা সরকারি কর্মীদের ভবিষ্যৎকে আরও সুরক্ষিত করবে।
পেনশন নিয়ে নতুন ঘোষণার পর থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের মধ্যে কৌতূহল বেড়েছে। কেমন হবে এই স্কিম? কতটা লাভজনক? কারা আবেদন করতে পারবেন? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে আগ্রহী অনেকে। বিশেষ করে, যারা অবসরের পরে আর্থিক নিরাপত্তা চান, তাদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ খবর। আসুন, নতুন পেনশন স্কিম (Unified Pension Scheme) সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
১ এপ্রিল থেকেই কার্যকর হচ্ছে ইউনিফায়েড পেনশন স্কিম (Unified Pension Scheme)
গত বছর আগস্ট মাসে এই স্কিমের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র সরকার। অবশেষে এটি বাস্তবায়নের পথে। পেনশন ফান্ড রেগুলেটরি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (PFRDA) জানিয়েছে, ১ এপ্রিল, ২০২৫ থেকে এই স্কিম কার্যকর হবে। আপাতত শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরাই এই স্কিমের আওতায় আসবেন। ১৯ মার্চ জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ১ এপ্রিল থেকে আগামী তিন মাসের মধ্যেই আবেদন করতে হবে। অর্থাৎ, ৩০ জুন, ২০২৫ পর্যন্ত আবেদন করার সুযোগ থাকছে। তবে যেসব কর্মচারী ছুটিতে থাকবেন এবং ১ এপ্রিলের পর কাজে যোগ দেবেন, তাদের জন্য আলাদা নিয়ম প্রযোজ্য হবে। তারা এক মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
বিনিয়োগের নিয়ম ও সুবিধা কী কী?
এই স্কিমের আওতায় কর্মচারীকে তাঁর মূল বেতনের (Basic Salary) ১০ শতাংশ এবং মহার্ঘ ভাতার (Dearness Allowance – DA) নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পেনশন তহবিলে জমা করতে হবে। এতে সরকারও সমপরিমাণ অর্থ জমা করবে, যা কর্মীদের জন্য একটি বড় সুবিধা। ফলে কর্মচারীরা নিশ্চিতভাবে বেশি রিটার্ন (Higher Returns) পাবেন। আরও বড় সুবিধা হল, এই স্কিমের আওতায় থাকা কর্মচারীরা পেনশন তহবিলের ডিফল্ট বিনিয়োগ (Default Investment Plan) ও ডিফল্ট প্যাটার্নের (Default Pattern) সুযোগ পাবেন। এর পাশাপাশি, গ্রাহকরা চাইলে ১০০ শতাংশ বন্ডে (Bond Investment) বিনিয়োগ করতে পারেন অথবা আংশিক ইক্যুইটিতে (Equity Investment) লগ্নি করার বিকল্পও পাবেন।
অবসরের পর সুবিধা, স্বামী-স্ত্রীও পাবেন আর্থিক সহায়তা
এই পেনশন স্কিম শুধু কর্মচারীর জন্য নয়, তাঁর পরিবারের জন্যও উপকারী। যদি কোনও বিনিয়োগকারীর হঠাৎ মৃত্যু হয়, তাহলে তাঁর স্বামী বা স্ত্রী এই প্রকল্পের আর্থিক সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এটি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের জন্য একটি বড় আশ্বাস, কারণ এতে তাদের অবসর জীবনের নিরাপত্তা আরও নিশ্চিত হবে।
এছাড়াও, বর্তমানে যারা ন্যাশনাল পেনশন স্কিম (NPS) এর আওতায় রয়েছেন, তাঁরাও এই ইউনিফায়েড পেনশন স্কিমে বিনিয়োগ করতে পারবেন। ফলে এটি পুরোনো ও নতুন কর্মচারী, উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ একটি সুযোগ।
কেন এই স্কিম আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ?
১. নিশ্চিত ভবিষ্যৎ (Secured Future) – কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের জন্য এটি একটি বড় আর্থিক সুবিধা।
২. উচ্চ হারে রিটার্ন (Higher Returns) – সরকারও সমপরিমাণ বিনিয়োগ করবে, ফলে কর্মচারীদের সঞ্চয় আরও বাড়বে।
৩. পরিবারের নিরাপত্তা (Family Security) – কর্মচারীর অনুপস্থিতিতেও তাঁর পরিবার আর্থিক সুবিধা পাবে।
৪. বিকল্প বিনিয়োগের সুযোগ (Investment Options) – ইক্যুইটি ও বন্ডে বিনিয়োগের সুযোগ থাকছে।
৫. সরকারি গ্যারান্টি (Government Guarantee) – বিনিয়োগ ঝুঁকিমুক্ত ও সরকারি সুরক্ষিত।
যারা এই স্কিমের আওতায় আসতে চান, তাদের জন্য এটি বড় সুযোগ। তবে ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুনের মধ্যে আবেদনের সময়সীমা মনে রাখতে হবে। বিস্তারিত জানতে আপনার নিকটবর্তী পোস্ট অফিস বা সরকারি দপ্তরে যোগাযোগ করুন!
আরও পড়ুন। Post Office Scheme: পোস্ট অফিসের এই স্কিমে বিনিয়োগে প্রতি মাসে মিলবে ৯২৫০ টাকা; জানুন বিস্তারিত