21 July TMC Rally: গতকাল ছিল তৃণমূলের শহিদ দিবস। আর সেই উপলক্ষে কলকাতার রাস্তায় নেমেছিল মানুষের ঢল। কাতারে কাতারে মানুষ যোগ দিয়েছিল সমাবেশে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের কর্মী সমর্থক থেকে শুরু করে টলি পাড়ার বিভিন্ন তারকা। উপস্থিত ছিলেন গায়ক নচিকেতাও। দীর্ঘ ১৫ বছর তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত থেকে কর্মসূচি মঞ্চে উপস্থিত থাকেন তিনি। তাঁর মতে, এত বছরে কয়েকটি জিনিস লক্ষ্য করেছেন তিনি।
এক, জনজোয়ার বাড়বেই। দুই, ২১শে জুলাই বৃষ্টি হবেই। তাঁর অনুরাগীদের মতে, তৃতীয়টি অবশ্যই তাঁর গান। এই বছরও ছোট্ট করে দুটো গান শুনিয়েছেন তিনি, ‘তুমি আসবে বলে’, ‘হয়তো তোমার জন্যে’। এই বছর সমাবেশে নতুন করে আর কী লক্ষ করার মতো বিষয় চোখে পড়েছিল তাঁর? সভা শেষে এক বিশ্বস্ত সংবাদমাধ্যমের তরফে সেটাই জানতে চাওয়া হয়েছিল নচিকেতার কাছে। গায়কের উত্তর, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরণ। আগের তুলনায় আরও পরিণত, তুখোড়। যে সমস্ত আগামী কর্মসূচির কথা বলল, সেগুলো ভীষণ প্রয়োজনীয়। ২০২৬-এর মধ্যে সেগুলো অবশ্যই পালন করতে হবে তৃণমূল কংগ্রেসকে।”
বরাবর নিজেকে রাজনীতিবোদ্ধার পরিবর্তে রাজনীতি মনস্ক বলে পরিচয় দিয়েছেন তিনি। আর সেই কারণেই ছয় বার নির্বাচনী প্রার্থী হিসাবে নাম ঘোষণার পরেও সরে গিয়েছেন তিনি। তবে কিসের টানে ছুটে আসেন ২১-শে জুলাইয়ের মঞ্চে? এর একাধিক কারণ জানিয়েছেন গায়ক নচিকেতা। জানিয়েছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে আসি। আমার গান মনে হয় ওঁর ভাল লাগে। আমি মঞ্চ থেকে ওঁকে গান শোনাই। উপস্থিত বাকিদেরও।” একটু থেমেছেন।
ফের বলেছেন, “আমি দুটো জিনিস দেখতে আসি। আকাশভাঙা বৃষ্টি। ওটা না থাকলে ২১ জুলাই যেন অসম্পূর্ণ! না হলেই বুক দুরুদুরু। আর লোকের ভিড়।” গায়কের মতে, গত ১৫ বছরে ২১শে জুলাইয়ের ভিড় উত্তরোত্তর বেড়েছে। প্রত্যেক বার মঞ্চ থেকে জনজোয়ার পরোক্ষ করেছেন তিনি, এ বারেও তার অন্যথা হয়নি। কিন্তু এ বারে তাঁর মনে হয়েছে, ২০২৪-এ চার দিকের বদলে পাঁচ দিক থেকে লোক এসেছিল! তাই সভার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পূর্ণ ছিল।
বিরোধীরা বলে, ডিম-ভাতের লোভে নাকি এই ভিড়? শহরতলি, গ্রাম-গঞ্জ থেকে ডিম ভাতের কারণে দলে দলে লোক সভায় যোগদান করেন? প্রশ্ন শুনে হেসে ফেলেন নচিকেতা। জবাবে “জানান, আমি ডিম খেতে খুব ভালবাসি। কেড়ে খেয়ে ফেলি। তা-ই যদি হবে, তা হলে সবার আগে এখানে আমি পাত পেড়ে বসে যেতাম।” তিনি জানিয়েছেন, ২০০৯-এ বিরোধী শক্তি ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনও সমাবেশে জায়গা ফাঁকা থাকত না। সে সময়ে বিরোধী নেত্রীর খরচ করার মতো অর্থও ছিল না। তখনও তাঁর কারণেই মানুষের ঢল আর এখনও তাই।
২০২৪- এর ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চ কিছু উপহারও দিয়েছে নচিকেতাকে। কী সেটা? গায়কের জবাব, “১৫ বছর আগের সহযোদ্ধাদের সঙ্গে দেখা হল। আমরা একসঙ্গে তিন বছর ধরে লড়াই করে ৩৪ বছরের বামশাসনের অবসান ঘটিয়েছিলাম।” দেখে মন যেমন ভাল হয়েছে, বিষাদও কিছুটা গ্রাস করেছে তাঁকে। বয়স বেড়েছে প্রত্যেকের। নিজের দল ভারী হওয়ায় বেশ খুশি নচিকেতা।কিন্তু পরক্ষণেই বিষণ্ণ মুখ, তবে কি তিনিও বুড়ো হয়ে হচ্ছেন?