Ekchokho.com 🇮🇳

Water Wasting in WB: খুব শীঘ্রই বন্ধ হবে রাস্তার পাশের সমস্ত কল, জলের অপচর রুখতে কড়া পদক্ষেপ নিলো রাজ্য সরকার !!

Last Updated:
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

Water Wasting in WB: কলকাতা শহর মানেই ব্যস্ত রাস্তাঘাট, অফিসফেরত ভিড়, আর মোড়ের ধারের স্ট্যান্ড পোস্ট থেকে অনবরত পড়তে থাকা জল! কোনো কল ভাঙা, কোনোটা খোলা, কেউ মুখ ধুচ্ছেন, কেউ বোতল ভর্তি করছেন, আবার কেউবা অকারণেই জল অপচয় করছেন। অথচ, বিশ্ব জুড়ে যখন পানীয় জলের সংকট বাড়ছে, তখন শহরের এমন চিত্র সত্যিই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই অপচয় আটকানোর জন্য বহুবার প্রচার চালিয়েছে পুরসভা। কিন্তু কিছুতেই লাভ হয়নি। বিভিন্ন এলাকায় স্ট্যান্ড পোস্টগুলোর মুখে ট্যাপ লাগানো হলেও, অনেক জায়গায় তা খুলে ফেলা হয়েছে বা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ফলে, একদিকে জল নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে সরকারের কোটি কোটি টাকা অপচয় হচ্ছে। এই অবস্থায় কলকাতা পুরসভা নতুন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে, যা অনেকেরই মনে আশঙ্কা তৈরি করেছে।

বিধানসভায় উঠল প্রশ্ন! কী বলল সরকার?

সোমবার বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে জল অপচয়ের বিষয়টি বড়সড়ভাবে উঠে আসে। বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষ সরাসরি প্রশ্ন করেন, “রাস্তার ধারে জলের এত অপচয় হচ্ছে, সরকার কী করছে?” উত্তরে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আমাদের লক্ষ্য রাস্তার কলের সংখ্যা কমানো। যেহেতু এখন প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই পানীয় জল পৌঁছে গিয়েছে, তাই স্ট্যান্ড পোস্ট রাখার দরকার নেই। তবে কিছু কিছু এলাকায় বিশেষ প্রয়োজন থাকলে সেগুলি রাখা হবে।”

এই সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। একদিকে বিরোধীরা বলছেন, নিচু তলার মানুষদের কথা না ভেবে সরকার একতরফা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। অন্যদিকে, পুরসভা বলছে, অকারণে জল নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।

স্ট্যান্ড পোস্ট বন্ধের হুঁশিয়ারি, এবার কী হবে?

কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বর্তমানে ৭৩ হাজার স্ট্যান্ড পোস্ট রয়েছে। প্রতিটি পোস্টের মুখে ট্যাপ লাগানো হলেও, বারবার সেগুলি ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম স্পষ্ট জানান, “আমরা ৩-৪ বার করে নতুন ট্যাপ লাগিয়েছি, কিন্তু তা বারবার নষ্ট হলে এবার স্ট্যান্ড পোস্টই তুলে নেওয়া হবে।”

তবে শুধু কলকাতা নয়, রাজ্যের অন্যান্য পুরসভাগুলিতেও একই সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে চলেছে। সরকার মনে করছে, যেহেতু এখন প্রায় প্রতিটি বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে গিয়েছে, তাই রাস্তার কলগুলির দরকার নেই। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, তাহলে যারা ফুটপাতে থাকে বা যাদের বাড়িতে জল নেই, তারা কী করবে?

জলের কর আসছে? কড়া সিদ্ধান্ত রাজ্যের!

ফিরহাদ হাকিম এদিন আরও জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন, “জলই জীবন, তাই জলের ওপর কর নেওয়া উচিত নয়।” তবে তিনি স্পষ্ট করেন, “যেসব এলাকায় দেখা যাবে বাণিজ্যিক ব্যবহারের বাইরে জল নষ্ট হচ্ছে, সেখানে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রয়োজনে জলের উপর কর বসানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।”

এই সিদ্ধান্তের ফলে একদিকে যেমন জলের অপচয় রোধ হবে, অন্যদিকে নতুন বিতর্ক তৈরি হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, এর ফলে সাধারণ নাগরিকদের ওপর বাড়তি চাপ আসতে পারে।

পুরসভার নতুন রিপোর্টে কী জানা গেল?

পুরসভা ইতিমধ্যেই একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, যেখানে জানানো হয়েছে—

রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভায় মোট ৭৩,০০০ স্ট্যান্ড পোস্ট রয়েছে।

এর মধ্যে ২৮২৩টি স্ট্যান্ড পোস্টের মুখে এখনও ট্যাপ লাগানো হয়নি।

এখনও পর্যন্ত ৬৪.৫ লক্ষ বাড়িতে জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

মার্চের মধ্যেই আরও ১১.৮২ লক্ষ বাড়িতে জল সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে।


এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে হয়তো শহরের জলের অপচয় কমবে, তবে নিম্নবিত্তদের জন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এখন দেখার, সরকার কীভাবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করে।

আরও পড়ুন। Higher Secondary Result: আর কিছুদিনের মধ্যেই প্রকাশ করা হবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার রেজাল্ট, শিক্ষা দপ্তর থেকে ফাঁস হল তারিখ !!

About Author