Sontu: বিশ্বব্যাপী সামাজিক মাধ্যমে পরিচিত ‘সেলিব্রিটি ডগ’ সন্তু পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছে, তার অনুরাগীদের চোখে জল এনে দিয়েছে। ফেসবুক, ইউটিউব এবং ইনস্টাগ্রামে সন্তুর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ভিডিও মুহূর্তেই ভাইরাল হতো, যা প্রায় পাঁচ লক্ষ ফলোয়ারের মন জয় করেছিল। ভারতসহ বিভিন্ন দেশে সন্তুর অসংখ্য ভক্ত ছিল, যারা তার প্রতিটি নতুন ভিডিওর অপেক্ষায় থাকতেন।
সন্তুর মৃত্যুর খবর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই তার অনুরাগীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। ফেসবুকে একজন লিখেছেন, “বলার কোনো ভাষা নেই। বুক ফেটে কান্না আসছে। সন্তু মা যেখানেই থাকিস, ভালো থাকিস।” অন্য একজন অনুরাগী মন্তব্য করেছেন, “সত্যি এটা মানা যায় না…ভগবান খুব নিষ্ঠুর। ভালো কাউকে নিয়ে যায়, জানি না এটা কেন করে? কী সুন্দর দেখতাম ওকে, মনে হতো ও আমাদের মতোই মানুষ।” এই ধরনের প্রতিক্রিয়া থেকে স্পষ্ট, সন্তু শুধুমাত্র একটি কুকুর ছিল না; সে ছিল তার ভক্তদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
কয়েক বছর আগে সন্তু ভারতে এসেছিল, যা তার ভক্তদের জন্য একটি বিশেষ মুহূর্ত ছিল। তার আগমনের খবর পেয়ে অভিনেত্রী দেবশ্রী রায় ছুটে গিয়েছিলেন সন্তুর সঙ্গে দেখা করতে। সন্তুর এই সফরের সময় তার কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করা হয়েছিল। ভোমরা-গোজাডাঙা সীমান্ত দিয়ে সড়কপথে ভারতে আনা হয়েছিল তাকে। কলকাতার একাধিক কুকুরপ্রেমী তখন সন্তুর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সন্তুর চলে যাওয়ার খবর শুনে তারা মেনে নিতে পারছেন না এই বাস্তবতা।
সন্তুর জনপ্রিয়তার পেছনে তার স্বতঃস্ফূর্ত আচরণ এবং মনোমুগ্ধকর ব্যক্তিত্ব ছিল প্রধান কারণ। তার প্রতিটি ভিডিওতে তার খেলার মেজাজ, মজার কাণ্ডকারখানা এবং মানুষের সঙ্গে তার আন্তরিক সম্পর্ক ফুটে উঠত। এই গুণাবলীর জন্যই সে এত দ্রুত মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিল। সন্তুর ভিডিওগুলি শুধু বিনোদন নয়, অনেকের জন্য মানসিক শান্তির উৎস ছিল। তার উপস্থিতি অনেকের জীবনে সুখ এবং আনন্দের মুহূর্ত এনে দিত।
সন্তুর মৃত্যুতে তার ভক্তরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। সামাজিক মাধ্যম জুড়ে তার স্মৃতিচারণা এবং তাকে শ্রদ্ধা জানানোর পোস্টে ভরে গেছে। অনেকেই তাদের প্রিয় মুহূর্তগুলি শেয়ার করছেন, যেখানে সন্তু তাদের জীবনে কীভাবে প্রভাব ফেলেছিল তা বর্ণনা করছেন। সন্তুর মৃত্যু আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, পোষা প্রাণীরা কেবল আমাদের সঙ্গী নয়, তারা আমাদের পরিবারের অংশ। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক গভীর এবং আবেগপূর্ণ, যা তাদের অনুপস্থিতিতে আমাদের হৃদয়ে শূন্যতা সৃষ্টি করে।
সন্তুর স্মৃতি তার ভক্তদের হৃদয়ে চিরকাল অমলিন থাকবে। তার আনন্দময় মুহূর্তগুলি আমাদের মনে হাসি এবং ভালোবাসার স্মৃতি হিসেবে বেঁচে থাকবে। সন্তুর জীবন আমাদের শেখায়, ভালোবাসা এবং আনন্দ ছড়ানোর জন্য বিশেষ কোনো পরিচয়ের প্রয়োজন নেই; একটি খাঁটি হৃদয়ই যথেষ্ট।